সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বেসিক নলেজ ২০ টি প্রশ্ন ও উত্তর পর্ব -১৮।

১। OPC এবং PPC সিমেন্টের মধ্যে পার্থক্য।
1.ক) OPC = ordinary Portland cement
(a) ক্লিংকার ৯৫% - ১০০% ।
(b) জিপসাম ০% - ০৫% ।

2.ক) PCC = Portland Composite cement
(a) ক্লিংকার ৬৫% - ৭৯%।
(b) স্লাগ,ফ্লাই এ্যাশ ও লাইম স্টোন ২১% - ৩৫%।
(c) জিপসাম ০% - ০৫% ।

২। কিভাবে বালির সূক্ষ্মতা গুণাংক নির্ণয় করতে হয় উদাহরণসহ ব্যাখ্যা চাই?

বালির সূক্ষ্মতা গুণাংকঃ বালির সূক্ষ্মতা গুণাংক মূলত বস্তুর আকার সম্পর্কে ধারনা দেয়। বস্তুর আকার যত ছোট হয়, এ গুণাংকের মান তত কম হয় এবং বস্তুর আকার যত বড় হয়, এ গূনাংকের মান তত বেশি হয়।

উপরে বড় ছিদ্রের ক্রমান্বয়ে ছোট ছিদ্রের ব্রিটিশ প্রমাণ সাইজের ৩ ইঞ্চি, ১.৫ ইঞ্চি, ০.৭৫ ইঞ্চি, ৪ নং, ৮ নং, ১৬ নং, ৩০ নং, ৫০ নং ও ১০০ নং চালুনিগুলো সাজিয়ে বালি চাললে সকল চালুনির অবশেষের পুঞ্জিভূভ শতকরা হারের সমষ্টিকে ১০০ দিয়ে ভাগ করলে বালির সূক্ষ্মতা গুণাংক (F.M) পাওয়া যায়।


কিভাবে বালির সূক্ষ্মতা গুণাংক নির্ণয় করতে হয় উদাহরণসহ ব্যাখ্যা চাই?

৩। কিভাবে নির্ণয় করতে হয়।
১। প্রথমে প্রতিটি চালুনির পুঞ্জীভূত অবশেষ হিসাব করতে হবে উক্ত চালুনির অবশেষ থেকে উপরের সবগুলো চালুনির যোগ করে। যেমনঃ উপরের ছকে ১৬ নং চালুনির পুঞ্জীভূত অবশেষ = ৫০ + ২৫ + ৫ = ৮০
২। তারপর শতকরা পুঞ্জীভূত অবশেষ হিসাব করতে হবে পুঞ্জীভূত অবশেষ কে নমুনার মোট ওজন দিয়ে ভাগ করে এবং ১০০ দিয়ে গুণ দিয়ে।
যেমনঃ উপরের ছকে ৩০ নং চালুনির % পুঞ্জীভূত অবশেষ = (২৮০/৫০০) × ১০০ = ৫৬
৩। তারপর শুধু সবগুলো % পুঞ্জীভূত অবশেষ যোগ করে ১০০ দিয়ে ভাগ করলেই বালির সূক্ষ্মতা গুণাংক পাওয়া যাবে।


৪। ইট কীভাবে তৈরি করা হয় ?
মাটিকে আয়তঘনক আকারের ছাঁচে ঢেলে ভিজিয়ে কাচা ইঁট তৈরি হয, তারপর এক রোদে শুকানো হয়। কাচা ইঁটকে আগুনে পোড়ালে পাকা ইঁট তৈরি হ্য়। বহু প্রাচীনকাল থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রোদে শুকানো বা আগুনে পোড়ানো ইট ব্যবহার হয়ে আসছে। যদিও ইট পাথরের মত দীর্ঘস্থায়ী এবং মজবুত নয়; তারপরও সহজলভ্যতা, অল্প খরচ এবং স্বল্প ওজনের জন্য এর জনপ্রিয়তা এবং ব্যবহার সর্বাধিক। ইঁট বানানোর সময় কিছু ইঁট বেশি পুড়ে যায় ও কেকের মত ফুলে উঠে এক ফোপা শক্ত কালচে খয়েরী আঁকা-বাঁকা আকৃতির ইঁট তৈরি করে, যাকে বলে ঝামা বা ঝামা ইট। ঝামা শক্ত ও এবড়ো খেবড়ো বলে ঘষামাজার কাজে ব্যবহৃত হয়।


৫। উত্তম ইটের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?

উত্তম ইটের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরুপ ।
১। উৎকৃষ্ট ইট বা প্রথম শ্রেণীর ইট আকারে সুষম। এর তলাগুলো সমান, কিনার ও কোণগুলো তীক্ষ্ম এবং পাশগুলো সমান্তরা।
২। এগুলোর বাংলাদেশী মানসম্মত পরিমাপ ২৪০ মিমি × ১১২ মিমি × ৭০ মিমি ( ৯.৫'' × ৪.৫'' × ২.৭৫'') অপেক্ষা ৩.১৭৫ মিমি (১/৮'') কম বা বেশি হতে পারে।
৩। সাম্য রং এ ধরনের ইটের অন্যতম বৈশিষ্ট্য কারণ বর্ণের সাম্যতা ইটের পোড়ান ও রাসায়নিক গঠনের সমরুপতার পরিমাপক। উৎকৃষ্ট ইট সাধারণত গাঢ় লাল বা তাম্র বর্ণের হয়ে থাকে।
৪। উৎকৃষ্ট ইটের কাঠিন্য এমন যে এতে নখ বা ছুরি দিয়ে আচঁড় কাটা যায় না। হাতুড়ি দ্বারা আঘাত করলে ঝন ঝন শব্দ হয়।
৫। ইংরেজি T অক্ষরের ন্যায় স্থাপন করে ১.৫ থেকে ১.৭ মিটার উচু থেকে শক্ত মাটির উপর ছেড়ে দিলে এ ধরনের ইট ভাঙ্গে না।
৬। এ ধরনের ইট সুবদ্ধ এবং মিহি ও সমবুনটনযুক্ত। এ ইট ভাংলে ভগ্ন তলে কোনরুপ চিড়, চুনের কণা বা বুদবুদ দৃষ্ট হয় না।
৭। ইট প্রধানত চাপ পীড়ন বহন করে এবং উৎকৃষ্ট ইটের বিচূর্ণন শক্তি ৪০০ – ৭০০ টন/বর্গমিটার
৮। এ ধরনের প্রতিটি ইটের ওজন প্রায় ৩.১২৫ কেজি (প্রচলিত বাংলাদেশী মানসম্মত ইট) এবং প্রতি ঘনমিটারের এর ওজন ১৮৯২ কেজি এর কম নয়।
৯। উৎকৃষ্ট ইটের পানি বিশোষণ এর শুষ্ক অবস্থায় ওজনের ১/৫ অংশ হতে ১/৭ অংশ (১৫% থেকে ২০%) এর অধিক নয়)।
১০। উৎকৃষ্ট ইট পানিতে ভিজালে আয়তনে পরিবর্তন হয় না।

৬। 3000 ঘনফুট কংক্রিটের জন্য কত সিমেন্টের প্রয়োজন?

মিক্সিং রেশিওর ওপর নির্ভর করে। 1:1.5:3 রেশিওতে লাগবে ৬৭৫ ব্যাগ, 1:1.25:2.5 রেশিওতে লাগবে ৭৮০ ব্যাগ।

৭। কাঠ কিভাবে পানি শোষণ করে?

কাঠের প্রধান উপাদান সেলুলোজ। একটি সেলুলোজ অণু এবং একটি পানির অণুর মধ্যবর্তী আকর্ষণ বল দুইটি পানির অণুর মধ্যকার আকর্ষণ বল অপেক্ষা বেশি হয়।আর হ্যাঁ এই আন্ত আণবিক আকর্ষণ বল হল তড়িৎ চুম্বকীয় বল যা অণু পরমাণুর চার্জিত উপাদানের মধ্যে ক্রিয়া করে। একারণে কাঠ দ্বারা পানি শোষিত হয়।

৮। ঘরের চালের ছাউনিতে ঢেউটিন, অ্যাসবেস্টস নাকি সিমেন্টের শিট ব্যবহার করা সাশ্রয়ী ও দীর্ঘস্থায়ী হবে?

সাশ্রয়ী কোনটি হবে তা তো পণ্যের দাম না জেনে বলা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট এ যোগাযোগ করলে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উত্তর পাবেন বলেই আমার বিশ্বাস।

অ্যাসবেস্টস এর ব্যবহার সারা বিশ্বে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে কারণ এটি ক্যান্সার আর কারণ। আমার পরামর্শ হবে এটা ব্যবহার না করা।

ঘরের ছাদ হিসেবে টিনের চাল একটা ভয়াবহ জিনিস। শীতের রাতে ঘরকে বানায় ডিপ ফ্রিজ, দিনের বেলা ইটের ভাটা। এক বছর পরেই বর্ষাতে হয়ে যায় চালনি। উপরে গাছ পালার ছায়া থাকলে গরমের সমস্যা কম হয়, কিন্তু পাতা পড়ে টিন যায় নষ্ট হয়ে। এদিকে দামও কিন্তু আহামরি কম না।

ইদানিং সিমেন্ট এর শিট পাওয়া যাচ্ছে বলে জানি। যদি আমার সামর্থ্যের মধ্যে দাম থাকে, তাহলে আমি আমার নিজের ঘরের ছাদে এটাই লাগাবো। তবে এর মান কেমন তা HBRI থেকে একটু ঝালাই করে নিয়েন।


৯। ঢালাই করতে কী অনুপাতে বালি-সিমেন্ট মেশানো উচিত।
এক এক কাজে এক এক রকমের অনুপাত দেওয়া হয়।যেমন ১ঃ৩, ১ঃ৪,১ঃ৫।
 
১০। ঢাকায় কৃত্রিম ঘাসের মেঝে কোথায় পাব?

কৃত্রিম ঘাসের মেঝে বলতে যদি ঘাস সদৃশ্য কার্পেট বুঝিয়ে থাকেন তবে সৈনিক ক্লাব থেকে মহাখালী মুখে (হাতের ডান দিকে) যাওয়ার পথে বেশ কিছু দোকান পাবেন।

১১। মরিচা কীভাবে রোধ করা যায়?
বাতাসে থাকা অক্সিজেন আর জলীয়বাষ্পের সাথে লোহার বিক্রিয়ায় মরিচা তৈরি হয়। তাহলে মরিচা রোধ করতে হলে লোহাকে অক্সিজেন ও জলীয়বাষ্পের সংস্পর্শ থেকে পৃথক রাখতে হবে। এজন্য সাধারণত রঙের প্রলেপ অথবা ইলেক্ট্রোপ্লেটিং ব্যবহার করা হয়। আবার লোহার(৭৪%) সাথে ক্রোমিয়াম(১৮%) ও নিকেল(৮%) মিশিয়ে সংকর ধাতু স্টেইনলেস স্টিল তৈরি করা হয়। যা দীর্ঘদিন মরিচা প্রতিরোধ করতে পারে।


১২। বাড়ির ছাদে, টবে অথবা আঙিনার ছোট্ট জায়গায় কীভাবে ধনিয়া ও পুদিনা লাগানো/চাষ করা যায়?
কোন বাড়ির ছাদে টবে অথবা আঙিনার ছোট্ট জায়গায় টেয়, বোল বা টপের মধ্যে মাটি দিয়ে ধনিয়া ও পুদিনা চাষ করা যায়।

 
১৩। রোদে বালি চকচক করে কেন?

আপনি হয়তোবা দেখে থাকবেন কাচ তথা আয়না তে আলো পড়লে খুব চকচক করে। এটা হয়ে থাকে মূলত আলোর প্রতিফলনের জন্য। আর সেই কাচ তৈরীর প্রধান কাঁচামাল হলো সিলিকন। আর বালিতে সেই সিলিকনের উপস্থিতি বিদ্যমান।যা আলোকে প্রতিফলিত করে। যার ফলে রোদে বালি চিকচিক বা ঝকঝক করে।

১৪। মডুলেশন ও ডি-মডুলেশনের প্রয়োজনীয়তা কিরূপ ?
ডিজিটাল সংকেত কে এনালগ আর এনালগ সংকেত কে ডিজিটাল করার জন্য মডুলেশন ডি মডুলেশন প্রয়োজন হয়।
 
১৫। আমড়া কাঠ দিয়ে ঢেঁকি বানানো না হলেও আর কী কী বানানো যায় বা কাজে লাগানো যায়?

আমড়া কাঠ অত্যন্ত নরম ও ভঙ্গুর। তাই এই কাঠ দিয়ে জ্বালানি কাঠ ছাড়া আর কিছু বানানো যায় না। জোর করে কিছু একটা বানালেও তা টেকসই হবে না।

১৬। কোন তরল পদার্থে লোহা ভাসে ও কেন ভাসে।
পারদের মধ্যে লোহা ভাসে। কারণ পারদের ঘনত্ব লোহার ঘনত্বের বেশি।অর্থাৎ লোহা দ্বারা অপসারিত পারদের ওজন, লোহার ওজন অপেক্ষা বেশি হয়।

১৭। ছাদে রড বাঁধার ক্ষেত্রে ডবল জালি বলতে কী বুঝব?
চার ইঞ্চির বেশি পুরুত্ব হলে ছাদের রড দুই লেয়ারে দিতে হবে। চার ইঞ্চির কম যেমন, বাথরুমের ফলস স্ল্যাব/সানশেড এসবে এক লেয়ার দিলেই হয়। লেয়ারকেই প্রচলিত ভাষায় জালি বলে। 

১৮। কংক্রিট দিয়ে ছাদ ও পিলার তৈরি করতে পাথরের খোয়া ও ইটের খোয়ার মধ্যে কোনটি ব্যবহার করা উত্তম?
যেটার ক্রাশিং স্ট্রেন্থ বেশি সেটাই তো ব্যবহার করা শ্রেয়।

১৯। কাঁঠালি চাম্বুল গাছ বাংলাদেশ এর কোথায় পাওয়া যাবে?

কাঁঠালি চাম্বুল গাছ মূলত পাহাড়ি গাছ। তাই পার্বত্য জেলা সমুহে এগুলো বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন বাড়িতে এ গাছ দেখতে পাওয়া যায়। 
 

No comments

Powered by Blogger.