নতুন বাড়ির করার আগে ভূমিকম্পের প্রস্তুতি।

নতুন বাড়ি তৈরি করার পূর্বে ভুমিকম্পের প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ বাড়ির ষ্ট্রাকচার তৈরি হয়ে গেলে আর কোন পরিবর্তন করা সম্ভব হয় না। তাই নতুন বাড়ি তৈরী করার পূর্বে যে সকল সতর্কতাগুলো মেনে চলা উচিত। সেগুলো নিচে দেয়া হলো।
 
নতুন বাড়ির করার আগে ভূমিকম্পের প্রস্তুতি।
নতুন বাড়ি করার আগে ভূমিকম্পের প্রস্তুতি
নতুন বাড়ির করার আগে ভূমিকম্পের প্রস্তুতি।
 
১। যে ভূমিতে বাড়ি বানাবেন সেই জায়গার লোকেশন ভালোভাবে পরিদর্শন করতে হবে। প্রথমে মাটি পরীক্ষা করতে হবে। মনে রাখা দরকার যেই ভূমি যে ডেবে (মাটি বসে যাওয়া) না যায়। এই বিষয়টি নির্ণয় করতে হবে। পেশাদার ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা মাটি পরিক্ষা করতে হবে।

২। প্রফেশনাল আর্কিটেক দ্বারা বাড়ির প্লান ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা বাড়ির ষ্ট্রাকচার ডিজাইন করাতে হবে। রড ব্যবহার করতে হবে ফাউন্ডেশন কোড অনুযায়ী। যাতে ভূমিকম্পের সময় অধিক সহনশীল হয় এবং ভুমিকম্পের ধাক্কায় টিকে থাকতে পারে।

৩। ভালো মানের ম্যাটেরিয়াল যেমনঃ রড, সিমেন্ট, বালি, ইট, খোয়া বা পাথর ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখা দরকার যে বাড়ি তৈরির ম্যাটেরিয়াল যদি ভালো না হয় বাড়ি কখনোই ভূমিকম্পের জন্য সহনশীল হবে না।

৪। ফাউন্ডেশনের গ্রেট বিম ও কলামের সংযোগ স্থলে ষ্ট্রাকচার ডিজাইন অনুযায়ী রড বসাতে হবে। ১৩৫ ডিগ্রী পর্যন্ত বাঁকানো থাকতে হবে। কলামের শেষ মাথায় লক্ষ্য রাখতে হবে বাঁধনের মধ্যে যেন ফাকা জায়গা কম থাকে। বিম ও কলামের সংযোগস্থলে জোড়া লাগানো যাবে না। হাইরাইজ বিল্ডিংয়ের লিফটের কংক্রিটের ওয়ালের থিকনেস বা পুরুত্ব প্রয়োজন মত হওয়া উচিত। গ্রাউন্ড ফ্লোরে গাড়ি পার্কিং ও কলাম বরাবর বাউন্ডারি প্রয়োজন মত থাকা উচিত।

৫। প্রতি বর্গফুটে ১০ থেকে ১৫ টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হবে ভূমিকম্প প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।


৬। ভূমিকম্প সহনীয় বাড়ি নির্মাণের সবচেয়ে ভালো উপায় হল। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড মেনে চলা। বাংলাদেশের বিল্ডিং কোড ৮ রিখটার স্কেল ধরে বাড়ি ডিজাইন করা হয়।



পুরনো বাড়ির জন্য ভূমিকম্পের প্রস্তুতিঃ
১। পুরনো বাড়ির জন্য প্রথমে কলাম গুলোকে শক্তিশালি করে তুলতে হবে। তার জন্য কলাম গুলোর সাইজ বা আকৃতি ফাউন্ডেশনের কাজ থেকে পরিমাণ মত বাড়াতে হবে। ব্রেসিং বা X- এর মত বন্ধনী পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। বিম বা নিচ দিক থেকে আনুভুমিক বরাবর ব্রেসিং দেওয়া যেতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনাকোনি আনুভুমিক বরাবরও ব্রেসিং দেওয়া হয়।

২। মাটি পরীক্ষা করতে হবে। মাটি ডেবে (মাটি বসে যাওয়া) যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে প্রয়োজন মত ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩। পুরনো বাড়ির জন্য প্রতি বর্গফুটে ৭০ থেকে ৯০ টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হবে। পুরনো বাড়ীর ক্ষেত্রে খরচটা একটু বেশী করতে হয়। বাড়ির প্রতিটি রুমে কোনায় খাড়াভাবে অতিরিক্ত কংক্রিটের কলাম ষ্টীলসহ নির্মাণ করা যেতে পারে। টানা লিল্টেন না থাকলে নতুন করে লিল্টেন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।



চিত্রে বাংলাদেশের ভুমিকম্পন এলাকার জোনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
জোন ১ - বেশি ঝুকিপূর্ণ এলাকাঃ বৃহত্তর দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল এবং সিলেট।

জোন ২- ঝুকিপূর্ণ এলাকাঃ বৃহত্তর রংপুর, পাবনা, ঢাকা, চট্রগ্রাম, পাহাড়ি অঞ্চল।

জোন ৩- কম ঝুকিপূর্ণ এলাকাঃ যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, এবং ভোলা।

No comments

Powered by Blogger.